রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন
মোঃ সিরাজুল ইসলাম
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার কর্ণগোপ এলাকার সেজান জুস ফ্যাক্টরি নামে পরিচিত হাসেম ফুড বেভারেজ কারখানায় লাগা আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ছয়তলা ভবনের ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় এখনো আগুন জ্বলছে। ৯ জুলাই শুক্রবার সকাল ১১ টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৭ টি ইউনিট। এ ঘটনায় দুই নারী শ্রমিকসহ ৩ জন মারা গেছে। এভাড়া আহত অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে অনেকে।
গত ৮ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে ওই কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ঘটে। রাত ১১ টার দিকে মোরছালিন (২৮) নামে প্রতিষ্ঠানটির আরো এককর্মী মারা যান বলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে কারখানাটিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনয় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩ জনে। এঘটনায় ৮ জুলাই বৃহস্পতিবার মিনা আক্তার (৪০) ও স্বপ্না রানী (৩৩) নামে দুই শ্রমিক নিহত হন। তাছাড়া নিখোঁজ শ্রমিকদেও জন্য আহাজারি করছেন স্বজনরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, তৃতীয় তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে তা খুব দ্রæতই আগুন ছড়িয়ে পড়ে ৬তলা ভবনজুড়ে। তখন ভবনের বিভিন্ন তলায় কর্মচারী ও কর্মকর্তারা আটকা পড়ে। কেউ কেউ প্রাণ বাঁচাতে লাফিয়ে নিচে পড়ে আহত হয়। বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লাগছে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস।
এদিকে ৬ তলা ভবনের চারতলায় বিস্কুটের কারখানায় সকাল থেকে কাজ করছিলেন ৪৭ নারী শ্রমিক। বিকেলে আগুন লাগার পর ভেতর থেকে শ্রমিকদের কাজ করতে তালা ঝুলিয়ে দেয়ায় কেউ বের হতে পারেনি বলে অভিযোগ স্বজনদের। নিখোঁজদের স্বজনরা জানান, সন্ধ্যারপর থেকে কারো সাথে কোন যোগাযোগ নেই।
পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা উদ্দীপন বলেন, আগুন লাগার ৩০ মিনিটের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করেন। কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ফ্যাক্টরির ছয়তলা বিশিষ্ট ভবনের তৃতীয় তলা থেকে গ্যাস লাইন লিকেজ কিংবা বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা ভবনের সকল ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে ফ্যাক্টরির কাঁচামাল, উৎপাদিত পণ্য ও মূল্যবান সামগ্রীসহ বিপুল পরিমাণ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। খবর পেয়ে কাঞ্চন, পূর্বাচল, ডেমরা, আড়াইহাজার, আদমজী ফায়ার সার্ভিসের ১৭ ইউনিটের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। আগুনে ভবনের বিভিন্ন তলায় ফ্যাক্টরির কর্মচারী ও কর্মকর্তারা আটকা পড়ে। কেউ কেউ লাফিয়ে নিচে পড়ে আহত হয়। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ সময় মহাসড়কের উভয়পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া আগুনে নিহতের ঘটনায় আতংকিত হয়ে শ্রমিকরা দ্বিকবিদিক ছুটোছুটি করে আহত হয়।
আগুন লাগার বিষয়ে সেজান জুস ফ্যাক্টরির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কারখানার গ্যাস লাইন লিকেজ কিংবা বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে। ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা যায়নি।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ্ নুসরাত জাহান বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৭ টি ইউনিট কাজ করে। আগুনে আটকে পড়া ভবনের ছাদ থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ১২ জন শ্রমিককে উদ্ধার করেছে।###
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।